১১ জুলাই ২০০৮
নাওযাত্রার প্রথম দিন
এক.
পরিকল্পনা মতো আমরা সময় মতোই পৌছুঁলাম। আমরা ভেবেছিলাম সত্যি সত্যি বুঝি মানুষের জন্য আমরা কিছু করতে এসেছি, প্রচণ্ড বৃষ্টি আর ঢেউয়ে তাই মনে হচ্ছিলো, হয়ে গেলো বোধ হয়। প্রথম দিনেই চার সেট জামাকাপড় ভেজালাম এবং এক সেট হারালাম। পরে অবশ্য বুঝলাম এটাও এক ধরনের 'উন্নয়ন পিকনিক', শুধু ন্যায্য বা স্থায়ীত্বশীল শব্দগুলো যুক্ত হবে।
দুই.
তাহিরপুরে জৈন্তিয়া ছিন্নমূল সংস্থার একটা সাইনবোর্ডে কেয়ার এবং ইইউ-এর নাম দেখলাম, এই প্রোগ্রামেও তারা আছে, ভালই কামাচ্ছে।
তিন.
বারিকের টিলা বাংলাদেশের খুবই সুন্দর জায়গাগুলোর অন্যতম, বিয়ের আগে প্রত্যেক প্রেমিক জুটির এখানে যাওয়া উচিৎ। বিয়ের পরেও (যদি) প্রেম থাকে, যেতে পারে।
চার.
দুপুরের খাবার এলো সাড়ে পাঁচটায়-ছয়টায়। এটিএনবাংলার এক সাংবাদিক খাদ্যস্বল্পতায় দারুন ক্ষুব্ধ হলেন।
পাঁচ.
যদিও থাকার কথা ছিল নৌকায়, জেনারেটর সমস্যায় থাকতে হলো বাংলোয়। ভালো ঘরগুলো অবশ্য দেয়া হলো অথবা নিলেন অ্যাকশনএইডের ফারহাত আর বাউপ-এর মর্তুজা।
ছয়.
রাতের খাবারে আবার অর্ধসিদ্ধি, আবার স্বল্পতা, আবার ক্ষোভ। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ফারহাত, তার ক্যামেরাম্যান সুমনের ওপর, "ক্যানো আমার খাবারের দৃশ্য ভিডিও করা হচ্ছে না?" বৃষ্টির জন্য ক্যামেরা ঢুকিয়ে রেখে বেচারা মারাত্মক অপরাধ করে ফেলেছে। ফারহাতের দ্বিতীয় ক্ষোভ, তার ঘরের প্লাগপয়েন্ট গোল গোল, অথচ তার ল্যাপটপের ব্যাটারিপ্লাগ চ্যাপটা। আর তার তৃতীয় ক্ষোভ, খাবার রান্না ভাল হয়নি। বোঝো ঠেলা!!!
(চলছে)
* ঠিক এক বছর আগের ঘটনা লিখছি এটা। বাংলাদেশের সবচেয়ে দায়িত্বশীল এনজিও অ্যাকশনএইডের একটা আয়োজন ছিল- নৌকায় করে পুরো হাওর এলাকা ঘোরা এবং চলতি পথে স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলে হাওর অঞ্চলের মানুষের মঙ্গামুক্তির জন্য "স্থায়ীত্বশীল" উপায় খুঁজে বের করা। নাওযাত্রার সেই মিছিলে আমিও ছিলাম, ডায়েরীতে লিখে রাখা নোটগুলোই তুলে দিলাম। কারণ সামনেই বাসা বদল করবো এবং ডায়েরিটাও যথারীতি হারিয়ে যাবে। দু'একদিনের মধ্যেই তুলে দিবো তেল গ্যাস রক্ষা আন্দোলনের লং মার্চের মশকরাগুলো।
No comments:
Post a Comment