Sunday, November 15, 2009

পরামর্শ চাই : রাণীশঙ্কৈল-এর ঐতিহাসিক রাধামাধব মন্দির পুনরানয়নের জন্য কিভাবে টাকা পাই?

ঠাকুরগাঁওয়ের জমিদারদের মধ্যে বুদ্ধিনাথ চৌধুরী কিছুটা ব্যতিক্রমী। সমকালীন অন্য জমিদারদের চেয়ে তার খ্যাতি একটু বেশিই ছিল। পৈত্রিক সূত্রে বাবা বুদ্ধিনাথ-এর কাছ থেকে জমিদারি পান টঙ্কনাথ। তিনিও তার সময়ে অত্যন্ত খ্যাতিমান ছিলেন। জমিদারির ব্যাপ্তী এবং শাসনকাজের বলিষ্ঠতার জন্য ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে রাজা উপাধি পেয়েছিলেন তিনি। রাণীশঙ্কৈল থানার পূর্বপাশে কুলিক নদীর তীরে মালদুয়ারে রাজা টঙ্কনাথের রাজবাড়ি। রাজবাড়িটির খুব কাছেই রাধামাধব মন্দির। ১৮৫০ সালের দিকে জমিদার বুদ্ধিনাথ চৌধুরী বাড়িটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। একই সময়ে তিনি কয়েকটি বিদ্যালয়ও নির্মাণ করেন। মন্দিরটিও ঐ সময়ে নির্মিত হয় বলে স্থানীয়ভাবে জানা যায়। ভিক্টোরিয়ান শৈলীতে নির্মিত তিনতলা বাড়িটির বিভিন্ন অংশের কাজ শেষ করেন রাজা টঙ্কনাথ চৌধুরী। মন্দিরটি বাড়ি তৈরির সমসাময়িক হলে এর বয়স প্রায় ১৫০ বছর।

দেশীয় রীতিতে ইটের তৈরি আটচালা মন্দিরটির সারা গা জুড়েই রয়েছে অসংখ্য কারুকাজ। জ্যামিতিক নকশা ছাড়াও নানা প্রাণী ও উদ্ভিদচিত্র পুরো মন্দিরের গা জুড়েই অলঙ্কৃত করা হয়েছে। সাধারণত মন্দিরগাত্রের অলঙ্করণগুলো পোড়ামাটির ফলক দিয়ে আবৃত থাকে। এখানে পোড়ামাটির ফলকচিত্র ছাড়াও ইট কেটে বা পলেস্তারা নকশা করে ফলক খোদিত হয়েছে।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে এই অনন্যসাধারণ মন্দিরটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, মন্দিরের পুরোহিত ও টঙ্কনাথ চৌধুরী পরিবারের অনেকেই দেশ ছেড়ে চলে যান। এর ফলে মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে এই মন্দির।

সম্প্রতি আমাদের অনুপ্রেরণায় স্থানীয় জনসাধারণ এই মন্দিরটি পুনরানয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মন্দিরের আদি বৈশিষ্ট্য বজায় রেখেই ব্যবহারোপযোগী করার জন্য প্রয়োজনীয় কর্ম ও ব্যয়-পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক কাজ-ও শুরু হয়েছে। এখন প্রয়োজন মন্দির পুনরানয়ন কাজকে বেগবান করার জন্য ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা।

এই মন্দিরটির সংরক্ষণ কাজ করতে প্রায় ২০ (বিশ) লাখ টাকা প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত স্থানীয় উদ্যোগে ১ (এক) লাখ টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। বাকী টাকা কিভাবে সংগ্রহ করা যায়, সে বিষয়ে সচলদের কাছে পরামর্শ চাচ্ছি।

No comments:

Post a Comment